সত্যি কথাটা বললেন মুমিনুল

 

       মুমিনুল ফিফটি পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। আজ চতুর্থ দিনে আউট হওয়ার পর

চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে বাংলাদেশ দলের পাওয়ার আর কিছু নেই।

শ্রীলঙ্কার ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশ দল চতুর্থ দিন শেষে ৬৭ ওভার ব্যাট করে ২৬৮ রান করেছে ৭ উইকেট হারিয়ে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম অপরাজিত থেকে ম্যাচটাকে পঞ্চম দিনে নিতে পেরেছেন, এটাই বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তি।

সিলেট টেস্টের পর চট্টগ্রামেও বাংলাদেশের এমন অবস্থার পেছনে দায়টা ব্যাটসম্যানদেরই। কাল ব্যাটসম্যানদের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে সে দায় মাথা পেতে নিয়েছেন জাকির হাসান। আজ মুমিনুল হকও তা–ই করলেন। তিনি অবশ্য এমন ব্যাটিংয়ের পেছনে প্রস্তুতিঘাটতিকেও একটা কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।

মুমিনুল হকের যুক্তি, ‘হতে পারে অনেক দিন পরে টেস্ট খেলছি। আপনার কাছে এটা একটা অজুহাত হতে পারে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, আপনার তো সমস্যা হয়নি? আমার সমস্যা হয়নি। কিন্তু যারা খেলছে, তারা বেশির ভাগ সাদা বলে খেলে আসছে। এটাই বাস্তব। জিনিসটা নেতিবাচক হতে পারে। কিন্তু নেতিবাচক হলেও কিন্তু অনেক সময় সত্য হয়।’


শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজে ব্যাটিংয়ে মোটেও ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ

মুমিনুল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত নভেম্বর-ডিসেম্বরের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের উদাহরণও টেনেছেন। সেই সিরিজে খেলার আগে বাংলাদেশ টেস্ট দলের খেলোয়াড়েরা প্রস্তুতি নিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট লিগ খেলে, ‘নিউজিল্যান্ড সিরিজ আমরা আরও দু-তিন মাস আগে খেলেছি। এর ভেতরেও অনেকে জাতীয় লিগ খেলছে।’

টেস্টের অধারাবাহিকতার সমস্যা শোধরাতে অভিজ্ঞদের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে বাধ্য করার প্রসঙ্গও এসেছে।

মুমিনুল অবশ্য এ প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আসল ছবিটা তুলে ধরেছেন, ‘আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান আর টেস্ট ক্রিকেটের মান কী এক?’ পরে যোগ করেন, ‘শুনতে খারাপ লাগবে, কিন্তু আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট ও টেস্ট ম্যাচ খেলার মধ্যে অনেক পার্থক্য। আকাশ–পাতাল তফাত। আপনারাও জানেন। আমিও জানি। সবাই জানে। এটা অজুহাত নয়। আমি নিজেও জাতীয় লিগ খেলি। এখানে (টেস্টে) যে ধরনের চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়, সেখানে তা হয় না। আমার কথা হয়তো অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি সততার জায়গা থেকে কথাগুলো বলছি।’

সাকিবও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে এ যেন নিয়মিত চিত্র
প্রস্তুতির ঘাটতি মুমিনুল সামলে নিতে পারলে অন্যরা পারছেন না কেন? এ ক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে মুমিনুল বলেছেন, ‘আমি চর্চার ভেতরে থাকি...আমার জন্য ও একজন জুনিয়র খেলোয়াড়ের মধ্যে তফাত আছে। আমি ৬১টা টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। এ কারণে ম্যাচের পরিস্থিতিগুলো আমি বুঝি, জানি আমি, কোন সময় কীভাবে হ্যান্ডেল করতে হয়। কখনো পারি, কখনো পারি না।’

অভিজ্ঞরা যখন দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটবিমুখ, তখন তরুণদের নিবেদন আশাবাদী করে তুলছে মুমিনুলকে, ‘এখন যারা আছে, সবাই টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি নিবেদিত। সত্যি কথা বলি, ফল না এলে অনেক কিছুই মনে হয়। কিন্তু এখন যে তরুণ দলটা আছে, তাদের টেস্ট খেলার প্রতি খুবই আগ্রহ, খুবই নিবেদিত। যারা আছে, সবাই জাতীয় লিগে নিয়মিত খেলে।’

গত দুই বছরে টেস্ট অভিষেক হওয়া জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান ও শাহাদাত হোসেনের কথা আলাদা করে বললেন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক, ‘ওদের একটা জিনিস ভালো, ওরা অনেক নিবেদিত। ওদের মধ্যে ক্ষুধা অনেক বেশি। জয় আর দিপু অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা খেলোয়াড়। চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় হওয়া কিন্তু এত সহজ নয়। ওদের মধ্যে সেই নিবেদন সব সময় দেখি। ওরা সেট হয়ে আউট হওয়ার পরও বা ৫০ রান করে আউট হলে ড্রেসিংরুমে দেখলে বোঝা যায় আসলে ওর ক্ষুধা আছে কি নেই। এই জিনিসগুলো ওদের ভেতর আছে। ওদের নিবেদনে কোনো সমস্যা নেই। ওরা যত টেস্ট খেলবে, তত অভিজ্ঞ হবে, তত ভালো খেলার সুযোগ বেশি থাকবে।’


Comments

Popular posts from this blog

President Biden just canceled plans to refill America's emergency oil reserve — here's why and what it means for you

এখনই বৃষ্টি চান না নওগাঁর ধানচাষিরা, আর বৃষ্টির জন্য হাহাকার আমচাষিদের